দেউলিয়া বিষয়ক আইন, ১৯৯৭
( ১৯৯৭ সনের ১০ নং আইন )
[১১ মার্চ, ১৯৯৭]
দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারার আওতাধীন ব্যক্তিগণ
Section- ১১৷ (১) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কোন ব্যক্তি ব্যতীত এমন যেকোন ব্যক্তি এই আইনের সূচিত দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারার আওতাধীন হইবেন, যিনি-
(ক) বাংলাদেশের বাসিন্দা হন অথবা তাহার পরিচালিত কাজকর্মের (business) প্রধান দপ্তর বাংলাদেশে রাখেন;
(খ) আর্জি পেশ করার অব্যবহিত পূর্ববর্তী এক বত্সরের মধ্যে যেকোন সময় বাংলাদেশে সাধারণভাবে বসবাস করিতেন অথবা উক্ত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে তাহার একটি আবাসস্থল বা কর্মস্থল ছিল;
(গ) সাধারণতঃ প্রতিনিধির মাধ্যমে বাংলাদেশে তাহার কাজকর্ম চালাইয়া থাকেন৷
(২) নিম্ন বর্ণিত কোন ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে আদালত কোন আর্জি গ্রহণ করিবেনা, যথা :-
(ক) জাতীয় সংসদ এবং বিচার বিভাগীয় সংস্থাসহ কোন সরকারী সংস্থা;
(খ) কোন দাতব্য বা ধর্মীয় সংস্থা;
(গ) মূখ্য উদ্দেশ্যে আর্থিক লাভ নয় এমন সংবিধিবদ্ধ (statutory) সংস্থা;
(ঘ) সরকার কর্তৃক বা সরকারের আর্থিক সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত কোন স্বশাসিত (autonomous) প্রতিষ্ঠান৷
দেউলিয়া কর্ম, আর্র্জ, ঘোষনাদেশ ইত্যাদি দেউলিয়া
দেউলিয়া কর্ম
৯৷ (১) কোন দেনাদারের নিম্্নবর্ণিত যেকোন একটি কাজই হইবে দেউলিয়া কর্ম, যথা :-
(ক) যদি তিনি বাংলাদেশ বা অন্যত্র তাহার এবং তাহার স্ত্রী, পুত্র, কন্যার নামে বেনামীতে রক্ষিত সকল বা প্রায় সকল সম্পত্তি সাধারণভাবে তাহার পাওনাদারগণের সুবিধার্থে কোন তৃতীয় ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করেন৷
(খ) যদি তিনি তাহার পাওনাদারগণের দাবী ব্যর্থ বা বিলম্বিত করিবার উদ্দেশ্যে তাহার এবং তাহার স্ত্রী, পুত্র, কন্যার নামে বেনামীতে রক্ষিত সম্পত্তি বা উহার কোন অংশ বাংলাদেশে বা অন্যত্র হস্তান্তর করেন;
ব্যাখ্যা৷- যদি কোন ব্যক্তি তাহার দেনা পরিশোধে অক্ষম থাকা অবস্থায় যুক্তিসংগত মূল্য ব্যতিরেকে তাহার সম্পত্তি বা উহার কোন অংশ হস্তান্তর করেন, তাহা হইলে তিনি তাহার পাওনাদারগণের দাবী ব্যর্থ বা বিলম্বিত করিবার উদ্দেশ্যে উক্ত হস্তান্তর করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন;
(গ) যদি তিনি তাহার সম্পত্তি বা উহার কোন অংশ বাংলাদেশে বা অন্যত্র এইরূপে হস্তান্তর করেন বা বন্ধক দেন বা দায়বদ্ধ বা চার্জযুক্ত করেন যে, তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার ক্ষেত্রে উক্তরূপ হস্তান্তর, বন্ধকীকরণ, দায়বদ্ধকরণ বা চার্জযুক্তকরণ এই আইন বা আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনের প্রতারণামূলক অগ্রাধিকার (fraudulent preference) হিসাবে ফলবিহীন পরিগণিত হয়;
(ঘ) তাহার পাওনাদারগণের দাবী ব্যর্থ বা বিলম্বিত করিবার উদ্দেশ্যে, যদি তিনি-
(অ) বাংলাদেশ ত্যাগ করেন বা বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থান করেন;
(আ) তাহার আবাসস্থল বা তাহার স্বাভাবিক কর্মস্থল ত্যাগ করেন;
(ই) এইরূপে আত্মগোপন করেন যে, তাহার পাওনাদারগণ তাহার সহিত যোগাযোগের সুযোগ হইতে বঞ্চিত হন; অথবা
(ঈ) ষড়যন্ত্র বা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করিয়া কোন আদালত বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত তাহার স্বার্থ বিরোধী ডিক্রী, রায় বা আদেশ মানিয়া লন;
(ঙ) যদি কোন অর্থ পরিশোধের উদ্দেশ্যে কোন আদালতের ডিক্রী বাস্তবায়ন (execution) প্রক্রিয়ায় তাহার কোন সম্পত্তি বিক্রি হইয়া থাকে;
(চ) দেউলিয়া ঘোষিত হইবার জন্য যদি তিনি স্বয়ং এই আইনের অধীনে আদালতে আর্জি পেশ করেন;
(ছ) যদি তিনি তাহার কোন পাওনাদারকে এই মর্মে লিখিত নোটিশ প্রদান করেন যে, তিনি তাহার দেনা পরিশোধ স্থগিত রাখিয়াছেন বা রাখিতে যাইতেছেন;
(জ) যদি কোন পাওনা পরিশোধে অক্ষমতাহেতু কোন আদালতের ডিক্রী বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় তাহাকে কারাগারে আটক রাখা হয়;
(ঝ) যদি অন্যুন ৫,০০,০০০.০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা বৈধ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ দেনার বিপরীতে এক বা একাধিক পাওনাদার উক্ত পাওনা পরিশোধ করিতে বা উহার বাবদ পাওনাদারের সন্তোষ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জামানত প্রদান করিতে অনুরোধ জানাইয়া এই আইনের অধীন একটি আনুষ্ঠানিক দাবীনামা (formal demand) প্রেরণ করিয়া থাকেন এবং উক্ত দাবীনামা জারীর পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে দেনাদার দাবী পূরণ না করেন৷
(২) উপ-ধারা (১)(ঝ) তে উল্লিখিত দাবীনামা নির্ধারিত ফরমে ও নির্ধারিত পদ্ধতিতে জারি করিতে হইবে এবং উক্ত দাবী অগ্রাহ্যের ফলাফলও উহাতে উল্লেখ করিতে হইবে৷
(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোন প্রতিনিধি (agent) এর কাজ তাহার নিয়োগকর্তার (principal) কাজ বলিয়া গণ্য হইবে৷
ঘোষণাদেশ প্রদানের ক্ষমতা
১০৷ দেনাদার কোন দেউলিয়া কর্ম করিলে, এক বা একাধিক যথাযোগ্য (eligible) পাওনদার বা উক্ত দেনাদার, এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, আর্জি পেশ করিতে পারিবেন, এবং আদালত উক্ত আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত দেনাদারকে দেউলিয়া ঘোষণা করিয়া একটি আদেশ প্রদান করিতে পারিবে; এই আইনে এইরূপ আদেশ দেউলিয়া ঘোষণাদেশ বলিয়া অভিহিত৷
অগ্রাধিকার রহিতকরণ
৬১৷ (১) যেক্ষেত্রে-
(ক) পরিশোধযোগ্য দেনাসমূহ পরিশোধে অক্ষম থাকা অবস্থায় দেনাদার তাহার কোন পাওনাদারের নিকট কোনভাবে কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করেন, অথবা কোন অর্থ পরিশোধ করেন, অথবা উক্ত পাওনাদারের অনুকূলে তাহার সম্পত্তির ব্যাপারে কোন দায়ে আবদ্ধ হন বা কোন বিচারকার্যের ধারায় তাহার স্বার্থ ক্ষুণ্ন হইতে দেন, এবং
(খ) উক্ত হস্তান্তর বা অর্থ পরিশোধ বা দায়বদ্ধ হওয়া বা স্বার্থ ক্ষুণ্ন হইতে দেওয়ার ফল এই হয় যে, উক্ত পাওনাদার অথবা তাহার প্রাপ্য পাওনার ব্যাপারে কোন জামিনদাতা (surety) বা নিশ্চয়তা প্রদানকারী ব্যক্তি (Guarantor) কোন অগ্রাধিকার লাভ করিয়াছেন, এবং
(গ) উক্তরূপ হস্তান্তরের বা অর্থ পরিশোধের দায়বদ্ধ হওয়ার বা উক্ত কার্যধারা সূচিত হওয়ার পরবর্তী ১ (এক) বত্সরের মধ্যে উক্ত দেনাদার, ১০ ধারার অধীনে দাখিলকৃত আর্জির ভিত্তিতে, দেউলিয়া ঘোষিত হইয়াছেন বা একটি পুনর্গঠন আদেশ প্রদত্ত হইয়াছে,
সেই ক্ষেত্রে, উক্তরূপে সম্পাদিত হস্তান্তর বা অর্থ পরিশোধ বা অর্জিত দায় বা উক্ত কার্যধারার ফলাফল, রিসিভারের ব্যাপারে, প্রতারণামূলক এবং ফলবিহীন (void) বলিয়া গণ্য করিতে হইবে, এবং আদালত উক্ত হস্তান্তর, অর্থ পরিশোধ, দায় বা বিচার কার্যধারার ফলাফল রহিত করিবে, এবং তত্প্রেক্ষিতে রিসিভার হস্তান্তরিত সম্পত্তি বা পরিশোধিত অর্থ উদ্ধার করিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, আদালত এমন কোন অর্থ পরিশোধ রহিত করিবে না যাহা ব্যবসায়ের স্বাভাবিক গতিতে কোন পাওনাদারকে প্রদান করা হইয়াছে, অথবা নিয়মিত পণ্য বা সেবার সরবরাহকারী হিসাবে পাওনাদার দেনাদারকে ধারে কোন অতিরিক্ত পণ্য বা সেবা সরবরাহ করিয়া থাকিলে উহার দরুণ দেনাদার যে অর্থ পরিশোধ করেন তাহাও আদালত রহিত করিবে না৷
(২) যিনি, দেউলিয়ার কোন পাওনাদারের মাধ্যমে বা অধীনে, সরল বিশ্বাসে এবং উপযুক্ত মূল্যবিশিষ্ট পণ্যের বিনিময়ে কোন স্বত্ব অর্জন করিয়াছেন, তাহার অধিকার এই ধারার বিধানের কারণে খর্ব হইবে না৷
No comments:
Post a Comment