অনুমোদন আদেশ ও উহার ফলাফল
৪৪৷ ধারা ৪৩ এর অধীন কোন প্রস্তাব অনুমোদন করা হইলে-
(ক) আদালত একটি আদেশের মাধ্যমে অনুমোদনের শর্তাবলী নির্ধারণ করিয়া দিবে;
(খ) আদালত উক্ত আদেশে দেউলিয়া ঘোষণাদেশ রদ করিবার বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিবে এবং তদ্প্রেক্ষিতে উক্ত রদকরণের ক্ষেত্রে ৪২ ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে; এবং
(গ) অনুমোদিত আপোষ-মিমাংসা বা পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা দেনাদারের নিকট প্রাপ্য এবং এই আইনের অধীনে প্রমাণযোগ্য সকল দেনার ব্যাপারে সকল পাওনাদারের উপর বাধ্যকর হইবে৷
দেনাদারকে পুনরায় দেউলিয়া ঘোষণা করার ক্ষমতা
৪৫৷ (১) অনুমোদিত আপোষ-মিমাংসা বা পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা অনুসারে দেনাদার যদি কোন কিস্তি পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হন, অথবা যদি আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত আপোষ-মিমাংসা বা পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা পাওনাদারের প্রতি অবিচার না করিয়া বা অবাঞ্ছিত বিলম্ব না করিয়া বাস্তবায়ন করা যাইবে না অথবা তত্সম্পর্কে প্রতারণামূলকভাবে আদালতের অনুমোদন লাভ করা হইয়াছে, তাহা হইলে আদালত বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনাক্রমে যথাযথ বিবেচনা করিলে, দেনাদারকে পুনরায় দেউলিয়া ঘোষণা করিতে এবং আপোষ-মিমাংসা বা পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা রদ করিতে পারে, কিন্তু ইহার ফলে উক্ত আপোষ-মিমাংসা ও পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা অনুসারে যথাযথভাবে সম্পাদিত কোন হস্তান্তর বা অর্থ পরিশোধ বা অন্য কোন কিছুর বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না৷
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোন দেনাদারকে পুনরায় দেউলিয়া ঘোষণা করা হইলে এবং উক্ত ঘোষণার পূর্বে তিনি কোন দেনা করিয়া থাকিলে উহা দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারায় প্রমাণযোগ্য হইবে৷
পুনর্গঠন আদেশ
৪৬৷ (১) দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের পূর্বে বা পরে যেকোন সময়, একজন যথাযোগ্য (eligible) দেনাদার তাহার দেনাসমূহ পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে আদালতের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং এইরূপ আবেদনপত্রে পুনর্গঠনের কারণ উল্লেখপূর্বক উহার সহিত একটি পুনর্গঠন পরিকল্পনা (plan of reorganisation) উপস্থাপন করিবেন৷
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোন আবেদন প্রাপ্তির পর যদি আদালত সন্তুষ্ট হয় যে, আবেদনকারী একজন যথাযোগ্য দেনাদার, তাহা হইলে আদালত উক্ত আবেদন প্রাপ্তির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে তত্সম্পর্কে শুনানীর একটি তারিখ নির্ধারণ করিবে; এবং কোন রিসিভার নিযুক্ত হইয়া থাকিলে তাহাকে এবং আদালতের নথিতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যথাযোগ্য পাওনাদারগণকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অথবা এইরূপ কোন বিধি না থাকিলে আদালতের বিবেচনামতে উপযুক্ত পদ্ধতিতে, উক্ত আবেদন শুনানীর তারিখ সম্পর্কে নোটিশ প্রদান করিবে৷
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীনে শুনানীর তারিখ নির্ধারণের সময় আদালত একজন অন্তর্বর্তী রিসিভার নিয়োগ করিবে, যদি ইতিপূর্বে কোন রিসিভার বা অন্তর্বর্তী রিসিভার নিযুক্ত না হইয়া থাকে৷
(৪) আবেদনটি শুনানীর তারিখ নির্ধারণের পর আদালত, প্রয়োজনীয় মনে করিলে-
(ক) ধারা ২৪(১) এর (ক) এবং (খ) দফায় বর্ণিত যেকোন ক্ষমতা প্রয়োগ এবং তদনুসারে যেকোন আদেশ প্রদান করিতে পারিবে; এবং
(খ) উহার নথিতে প্রাপ্ত তথ্যাদির নিরীখে পুনর্গঠন পরিকল্পনা পরীক্ষা করিতে এবং আদালত কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, যাহা উপ-ধারা (২) এর অধীনে নির্ধারিত শুনানীর তারিখের পর হইবে না, এর মধ্যে উক্ত পরিকল্পনা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রণয়নের জন্য রিসিভারকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে; এবং এইরূপ নির্দেশ অনুসারে রিসিভার, প্রস্তাবিত পরিকল্পনার বাস্তবায়নযোগ্যতা সম্পর্কে তাহার মতামতসহ, উক্ত পরিকল্পনার উপর একটি প্রতিবেদন দাখিল করিবেন৷
(৫) যথাযোগ্য পাওনাদারগণ এবং রিসিভার আবেদন শুনানীর তারিখের পূর্বে প্রস্তাবিত পুনর্গঠনের ব্যাপারে তাহাদের লিখিত আপত্তি বা পরামর্শ দাখিল করিতে পারিবেন; এবং আদালত উপ-ধারা (৪)(খ) অনুসারে রিসিভার কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদন, যদি থাকে, এবং উক্ত আবেদন ও কোন আপত্তি বা পরামর্শ দাখিল করা হইলে তদ্সম্পর্কে শুনানীর পর নিম্্নবর্ণিত বিষয়াদি বিবেচনায় রাখিয়া একটি পুনর্গঠন আদেশ প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) জাতীয় স্বার্থ;
(খ) পাওনাদারগণের স্বার্থ;
(গ) দেনাদারের স্বার্থ:
তবে শর্ত থাকে যে, আদালতে প্রমাণিত সকল দেনার মূল্যমানের ভিত্তিতে যদি দুই-তৃতীয়াংশ পাওনাদার, ব্যক্তিগতভাবে বা তাহাদের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে, উক্ত পুনর্গঠন পরিকল্পনা সম্পর্কে লিখিত সম্মতি জ্ঞাপন না করেন, তাহা হইলে কোন পুনর্গঠন আদেশ প্রদান করা হইবে না;
আরও শর্ত থাকে যে, আদালত, পুনর্গঠন আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে, উক্ত পরিকল্পনায় সম্মতি প্রদান করে নাই এইরূপ পাওনাদার বা বিভিন্ন শ্রেণীর পাওনাদারগণ বা সাধারণভাবে সকল পাওনাদারগণের স্বার্থ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে, বিধির বিধান সাপেক্ষে, উক্ত পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় রদবদলসহ উহার বিবেচনামত প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপ করিতে পারিবে, এবং এইরূপ রদবদল ও শর্ত পরিকল্পনার অংশ হইবে৷
(৬) পুনর্গঠনের আদেশ প্রদানের তারিখের পূর্বে প্রাপ্য হয় এইরূপ দেনাসহ এই আইনের অধীন প্রমাণযোগ্য সকল দেনার ব্যাপারে উক্ত আদেশ দেনাদার এবং সকল পাওনাদারের উপর বাধ্যতামূলক হইবে৷
(৭) উপ-ধারা (৫) এর অধীনে কোন পুনর্গঠন আদেশ প্রদান করা হইলে, ইতিপূর্বে প্রদত্ত দেউলিয়া ঘোষণাদেশ, যদি থাকে, আপনা-আপনি রদ হইয়া যাইবে; কিন্তু এইরূপ রদ হওয়ার ফলে উক্ত ঘোষণাদেশ প্রদত্ত হওয়ার পর এই আইনের অধীনে যথাযথভাবে সম্পাদিত কোন হস্তান্তর বা অর্থ পরিশোধ বা অন্য কোন কিছুর বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না৷
(৮) উপ-ধারা (৫) এর অধীনে পুনর্গঠন আদেশ প্রদত্ত হইলে, দেনাদারের বণ্টনযোগ্য সম্পদ (Estate) আপনা আপনি রিসিভারে ন্যস্ত হইবে, এবং দেনাদার, এই আইনের বিধানাবলী ও রিসিভারের তত্ত্বাবধান সাপেক্ষে, তাহার বণ্টনযোগ্য সম্পদ এবং তত্সংশ্লিষ্ট কোন ব্যবসা-বাণিজ্য থাকিলে তিনি উহার বিশেষ ব্যবস্থাপক (special manager) হইবেন৷
(৯) আদালত-
(ক) স্বীয় উদ্যোগে অথবা রিসিভার বা কোন যথাযোগ্য পাওনাদারের আবেদনক্রমে, এবং
(খ) যাহার বিরুদ্ধে আবেদন করা হইয়াছে তাহাকে অথবা, ক্ষেত্রমত, যথাযোগ্য পাওনাদার বা রিসিভারকে বা দেনাদারকে নোটিশ প্রদান করিয়া এবং বিষয়টি সম্পর্কে শুনানীর যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদানের পর,
রিসিভার বা তৃতীয় কোন ব্যক্তিকে দেনাদারের স্থলে বিশেষ ব্যবস্থাপক, অতঃপর বিকল্প ব্যবস্থাপক বলিয়া অভিহিত, নিয়োগ করিতে পারিবে৷
(১০) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলী পুনর্গঠন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে, এই ধারার বিধান সাপেক্ষে, সেই একইরূপে প্রযোজ্য হইবে যেরূপে সেগুলি কোন দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়৷
(১১) যে ক্ষেত্রে পুনর্গঠন আদেশ প্রদত্ত হয়, সেই ক্ষেত্রে-
(ক) আর্জি দাখিলের তারিখের পর এবং পুনর্গঠন আদেশের তারিখের পূর্বে যে কোন সময়, দেনাদার কর্তৃক অর্জিত কিংবা তাহার উপর ন্যস্ত সকল সম্পদ বণ্টনযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(খ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বা এইরূপ বিধান না থাকিলে আদালত কর্তৃক ধার্যকৃত তারিখের পূর্বে যেকোন সময় যেকোন পাওনাদার তাহার দাবী প্রমাণ করিতে পারিবেন;
(গ) আর্জি দাখিলের পর দেনাদার যদি কোন দেনা করেন, তবে তাহা প্রশাসনিক (administrative) দাবী বলিয়া গণ্য হইবে;
(ঘ) অনুমোদিত পুনর্গঠন পরিকল্পনার শর্ত মোতাবেক দেনাদার দায়মুক্তি পাইতে পারেন, যদি আদালত সেইমর্মে আদেশ প্রদান করে;
(ঙ) ধারা ৪৭ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, দেনাদার কোন সম্পত্তির দখলে থাকিলে এবং পুনর্গঠনের স্বার্থে উক্ত সম্পত্তি তত্কর্তৃক ব্যবহার করা প্রয়োজনীয় হইলে, তিনি উক্ত সম্পত্তির দখল অব্যাহত রাখিতে পারিবেন, যদিও উক্ত সম্পত্তি কোন পূর্বস্বত্ব (lien) বা বন্ধক সাপেক্ষ হয় বা অন্য কোনভাবে জামানতসহ দায়বদ্ধ থাকে:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ সম্পত্তির দখল গ্রহণের জন্য আদালত কোন জামানতকারী পাওনাদারকে অনুমতি দিতে পারিবে, যদি আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, পুনর্গঠনের বিষয়টি নিষ্পন্নাধীন থাকাকালে উক্ত সম্পত্তিতে তাহার স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষিত হয় নাই অথবা উক্ত সম্পত্তিতে দেনাদারের আর কোন ন্যায়ানুগ স্বার্থ (equity) নাই;
(চ) ধারা ৬৬-তে বিধৃত হারে রিসিভার ফিস গ্রহণের অধিকারী হইবেন;
(ছ) রিসিভার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অথবা এইরূপ বিধি না থাকিলে আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, অনধিক সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি পাওনাদার কমিটি গঠন করিবেন; তবে সদস্যগণকে এমন পাওনাদার হওয়া প্রয়োজন যে, তাহাদের পাওনা জামানতবিহীন ও পরিমাণের দিক হইতে সর্বোচ্চ এবং তাহারা কমিটিতে সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হইতে ইচ্ছুক৷
(১২) এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত কোন বিধির বিধানের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া আদালত পুনর্গঠন আদেশে নিম্্নবর্ণিত বিষয়গুলি নির্ধারণ করিয়া দিবে, যথা:-
(ক) বণ্টনযোগ্য সম্পদ ও তদ্সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে দেনাদারের ক্ষমতা ও কর্তব্য এবং তাহার উপর আরোপিত বাধা নিষেধ;
(খ) উক্তরূপ ব্যবস্থাপনা রিসিভার কর্তৃক পরিবীক্ষণের (monitor) পদ্ধতি;
(গ) পাওনাদার কমিটি কর্তৃক রিসিভারকে পরামর্শ প্রদানের ক্ষেত্রসমূহ;
(ঘ) উক্তরূপ ব্যবস্থাপনা ও পরামর্শের ব্যাপারে রিসিভারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;
(ঙ) পুনর্গঠন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রযোজ্য সময়সীমা এবং দিক নির্দেশনা৷
(১৩) পুনর্গঠন আদেশ প্রদানের পর আদালত যদি, স্বীয় উদ্যোগে বা রিসিভার বা কোন যথাযোগ্য পাওনাদারের আবেদনক্রমে, লিখিত কারণ উল্লেখপূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, পুনর্গঠন আদেশ প্রদান যথাযথ হয় নাই বা পরিবর্তিত পরিস্থিততে উক্ত আদেশ সংশোধন বা প্রত্যাহার করা উচিত, অথবা আদালত এবং পাওনাদারগণের নিকট গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করিতে বিশেষ ব্যবস্থাপক বা বিকল্প-ব্যবস্থাপক অক্ষম, তাহা হইলে আদালত, হয় পুনর্গঠন আদেশ, উহার বিবেচনায় যথাযথভাবে, সংশোধন করিবে নতুবা উহা রদ করিবে; এইরূপ রদকরণের ক্ষেত্রে, আদালত দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করিবে এবং এইরূপ আদেশ প্রদত্ত হইলে উহা আর্জি দাখিলের তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, এবং তদনুসারে এই অধ্যায় ব্যতীত এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলী সংশ্লিষ্ট কার্যধারা ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সংশোধন বা রদকরণের ফলে, উহার পূর্বে অনুমোদিত পুনর্গঠন পরিকল্পনার অধীনে যথাযথভাবে সম্পাদিত কোন হস্তান্তর বা অর্থ পরিশোধ বা অন্য কোন কিছুর বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না৷
পঞ্চম অধ্যায়
দায়মুক্তি ও দায়গ্রস্ত দেউলিয়া
দায়মুক্তি
৪৭৷ (১) কোন একক দেউলিয়ার ব্যাপারে আদালত তাহার দায়মুক্তির আদেশ দিতে পারিবে, এবং এইরূপ আদেশের ফলে উক্ত দেউলিয়া ৩৯ ধারার অধীনে প্রমাণযোগ্য সকল দাবী, দেনা ও দায় হইতে অব্যাহতি লাভ করিবেন, যদি আদেশে সুনির্দিষ্টভাবে ভিন্নরূপ কোন কিছু না থাকে৷
(২) দেনাদার আর্জি দাখিল করিলে উক্ত আর্জিতেই তিনি তাঁহার দায়মুক্তির জন্য প্রার্থনা করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, এবং যেক্ষেত্রে এক বা একাধিক যথাযোগ্য পাওনাদার উক্ত দরখাস্ত দাখিল করেন, সেক্ষেত্রে ধারা ৩০(১)(খ)(অ) এর অধীনে নির্ধারিত তারিখের পূর্বে দেনাদার তাহার দায়মুক্তির জন্য আবেদন করিবেন৷
(৩) দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের সময় আদালত উক্ত আদেশের একটি তারিখ নির্ধারণ করিবে যে তারিখে অনুষ্ঠিতব্য শুনানীর উদ্দেশ্য হইবে দেনাদারকে দায়মুক্ত করা হইবে কি না তাহা সর্বপ্রথম বিবেচনা করা, এবং উক্ত তারিখ হইবে উক্ত আদেশ প্রদানের তারিখের ৬০ (ষাট) দিনের পরবর্তী কোন তারিখ:
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ২৭(৩) মোতাবেক দেউলিয়ার জিজ্ঞাসাবাদ সমাপ্ত না হইয়া থাকিলে উক্তরূপ শুনানী মুলতবী করিতে হইবে৷
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন শুনানীকালে আদালত যদি সন্তুষ্ট হয় যে, দেনাদারের নৈতিক স্খলন বা অবহেলার কারণে নহে, বরং সম্পূর্ণভাবে তাহার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে তাহার দেউলিয়া অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে, তাহা হইলে আদালত অবিলম্বে তাহার দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করিবে৷
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীনে কোন দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করা না হইলে, দেউলিয়া তাহার দায়মুক্তির জন্য আদালতের নিকট একটি স্বতন্ত্র আবেদন করিতে পারিবেন এবং আদালত তত্সম্পর্কে একটি শুনানীর তারিখ ধার্য করিবে, তবে ২৭(৩) ধারার অধীনে অনুষ্ঠিত দেনাদারের জিজ্ঞাসাবাদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত শুনানী করা হইবে না৷
(৬) যদি দেনাদার বাংলাদেশের বাহিরে বসবাস করেন এবং আদালত মনে করে যে, সঙ্গতির অভাবে বা অন্য কোন সন্তোষজনক কারণে তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করিতে অসমর্থ, অথবা যদি দেনাদার একজন উন্মাদ (lunatic) হন বা আদালত যদি মনে করে যে, দেনাদার এমন কোন দৈহিক বা মানসিক অসুস্থতা বা অক্ষমতায় ভুগিতেছেন যে, প্রকাশ্য জিজ্ঞাসাবাদে উপস্থিত থাকিবার জন্য তিনি উপযুক্ত নহেন, তাহা হইলে আদালত জিজ্ঞাসাবাদ হইতে তাহাকে অব্যাহতি দিতে বা আদালতের বিবেচনামতে যথাযথ শর্তাধীনে, পদ্ধতিতে এবং স্থানে তাহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে৷
(৭) দায়মুক্তির আবেদন সম্পর্কে শুনানীর জন্য আদালতের নথিতে লিপিবদ্ধ প্রত্যেক পাওনাদারকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে এবং এইরূপ কোন বিধি না থাকিলে আদালত কর্তৃক নির্দেশিত পদ্ধতিতে নোটিশ প্রদান করিতে হইবে৷
(৮) শুনানীর সময় আদালত আবশ্যিকভাবে রিসিভারের বক্তব্য শুনিবে এবং কোন পাওনাদারের বক্তব্যও শুনিতে পারে, এবং আদালত প্রয়োজন মনে করিলে দেনাদারকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতে এবং সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে পারেন৷
দায়মুক্তি প্রভাবিত করিতে পারে এমন বিষয়সমূহ
৪৮৷ (১) ধারা ৪৭(৫) এর অধীনে দাখিলকৃত আবেদনপত্রের শুনানীকালে, আদালত-
(ক) দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারা নিষ্পন্নাধীন থাকাকালে দেনাদারের আচরণসহ তাহার সাধারণ আচরণ এবং কার্যকলাপ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত ও দাখিল করিবার জন্য রিসিভারকে নির্দেশ প্রদান করিবে;
(খ) উক্ত প্রতিবেদন বিবেচনাক্রমে, নিঃশর্ত দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করিতে বা উহা প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবে অথবা দায়মুক্তির আদেশ প্রদানের পরবর্তীকালে দেনাদারের প্রাপ্ত বা তত্কর্তৃক অর্জিতব্য কোন আয় বা অর্জন সম্পর্কে কোন শর্ত আরোপ করিয়া দায়মুক্তির আদেশ দিতে পারিবে৷
(২) আদালত দায়মুক্তির আদেশ প্রদানের আবেদন প্রত্যাখ্যান করিতে অথবা এইরূপ আদেশ প্রদত্ত হইলে উহার কার্যকারিতা নির্ধারিত মেয়াদের জন্য স্থগিত করিতে পারিবে, যদি আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে-
(ক) দেনাদার এই আইনের অধীন, অথবা দণ্ডবিধির ৪২১, ৪২২, ৪২৩ বা ৪২৪ ধারার অধীন কোন অপরাধ করিয়াছেন; অথবা
(খ) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত কোন ঘটনা প্রমাণিত হইয়াছে:
তবে শর্ত থাকে যে, আদালত উহার নথিতে লিপিবদ্ধ মোট দেনার অন্ততঃ ৫০% এর সমপরিমাণ অর্থ দেনাদার কর্তৃক আদালতে জমাকরণের শর্ত সাপেক্ষে উক্ত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আদেশ দিতে পারে৷
(৩) এই ধারার অধীনে প্রদত্ত কোন শর্তযুক্ত আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে দুই বত্সর অতিক্রান্ত হওয়ার পর যে কোন সময় আদালত যদি সংশ্লিষ্ট দায়গ্রস্ত দেউলিয়ার ব্যাপারে এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, উক্ত আদেশের শর্ত পালন করার মত অবস্থায় আসার সম্ভাবনা তাহার নাই, তাহা হইলে আদালত, উহার বিবেচনামতে উপযুক্ত পদ্ধতিতে এবং শর্তসাপেক্ষে, উক্ত আদেশ বা পরবর্তী কোন আদেশ সংশোধন করিতে পারিবে৷
(৪) উপ-ধারা (২) (খ) তে উল্লিখিত ঘটনাসমূহ হইতেছে এই যে,-
(ক) দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের অব্যবহিত পূর্বের তিন বত্সরের মধ্যে বা বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালত কর্তৃক নির্ধারিত স্বল্পতর সময়, এর মধ্যে, দেনাদার তাহার ব্যবসায়িক লেন-দেন এবং আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য প্রদানকারী হিসাব-বহি রক্ষণাবেক্ষণ করেন নাই;
(খ) দেনাদার নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানার পরও বা তাহা বিশ্বাস করার সংগত কারণ থাকা সত্বেও, তিনি তাহার কারবার চালু রাখিয়াছিলেন;
(গ) দেনাদার এইরূপ কোন দেনার চুক্তি করিয়াছেন যাহা তিনি পরিশোধ করিতে পারিবেন বলিয়া উক্ত চুক্তির সময় আশা করার যুক্তিসংগত কারণ ছিল না; এইরূপ পরিশোধের আশা করার যৌক্তিকতা প্রমাণের দায়িত্ব দেনাদারের উপর বর্তাইবে;
(ঘ) দেনাদারের বেপরোয়া ফটকামূলক কাজকর্ম (rash speculation), বা অসংযমী জীবন-যাপন, বা হটকারিতা, বা ব্যবসা-বাণিজ্যে ও বিষয়াদিতে যুক্তিসংগত সতর্কতা ও মনোযোগের অভাব, তাহাকে দেউলিয়া করিয়াছে, অথবা দেউলিয়া হইতে অবদান রাখিয়াছে;
(ঙ) দেউলিয়ার বিরুদ্ধে যথাযথভাবে আনীত কোন মামলা বা অন্য কোন কার্যধারায় তুচ্ছ বা হয়রানিমূলক (frivolous or vexatious) আপত্তিকর অবতারণা করিয়া দেনাদার উক্ত মামলা বা কার্যধারার নিষ্পত্তি বিলম্ব করিয়াছেন বা তাহার সংশ্লিষ্ট পাওনাদারকে অপ্রয়োজনীয় খরচ করিতে বাধ্য করিয়াছেন;
(চ) আর্জি দাখিলকৃত হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাসের মধ্যে দেনাদার তাহার কোন পাওনাদারকে অবৈধ অগ্রাধিকার প্রদান করিয়াছেন;
(ছ) দেনাদার ইতিপূর্বে বাংলাদেশে বা অন্যত্র দেউলিয়া ঘোষিত হইয়াছেন, অথবা তাহার দেনা পরিশোধের ব্যাপারে কোন আপোষ-মিমাংসা বা পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা বা পুনর্গঠন পরিকল্পনা অনুমোদিত হইয়াছে;
(জ) দেনাদার কোন প্রতারণার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হইয়াছেন;
(ঝ) আর্জি দাখিল হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাসের মধ্যে দেনাদার এইরূপ পরিস্থিততে বাংলাদেশের বাহিরে কোন সামগ্রী প্রেরণ করিয়াছেন যাহা হইতে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ রহিয়াছে যে, উক্ত সামগ্রী প্রেরণ সদুদ্দেশ্যমূলক বাণিজ্যিক লেন-দেন ছিল না;
(ঞ) দেনাদারের বণ্টনযোগ্য সম্পদের মূল্য তাহার জামানতবিহীন দায় (unsecured liabilities) এর ৫০% এর সম-পরিমাণ নহে, যদি না তিনি আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে পারেন যে, এই পরিস্থিতি উদ্ভূত হওয়ার জন্য তাহাকে ন্যায়সংগতভাবে দায়ী করা যায় না৷
(৫) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে রিসিভারের প্রতিবেদন উহাতে উল্লিখিত ঘটনাসমূহের ব্যাপারে প্রাথমিক সাক্ষ্য বলিয়া গণ্য করিতে হইবে৷
(৬) দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারায় প্রমাণযোগ্য যে দেনা দায়মুক্তির আদেশ প্রদানের তারিখে অপরিশোধিত থাকে তত্সম্পর্কে বা উহার অংশ-বিশেষ সম্পর্কে আদালত, এই ধারার অধীন আরোপণীয় অন্যতম শর্ত হিসাবে, দেনাদারকে এইরূপ নির্দেশ দিতে পারিবে যে, তিনি উক্ত অপরিশোধিত দেনা বা উহার অংশ-বিশেষ সম্পর্কে রিসিভারের সিদ্ধান্তে সম্মতি দিবেন৷
(৭) দেনাদার উপ-ধারা (৬) এর বিধান মোতাবেক রিসিভারের কোন সিদ্ধান্তে সম্মতি প্রদান করিলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত অপরিশোধিত দেনা বা উহার অংশ-বিশেষ আদায়ের জন্য, আদালতের অনুমতি ব্যতীত, কোন কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না; এবং আদালত এইরূপ অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে, যদি উহা প্রমাণিত হয় যে, দেনাদারের দায়মুক্তির পর তাহার অর্জিত সম্পত্তি বা আয় উক্ত দেনা বা উহার অংশ-বিশেষ পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত৷
(৮) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নিম্্নরূপ ধারণাগুলি (Presumptions) প্রযোজ্য হইবে, যথা:-
(ক) যদি দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারার যেকোন পর্যায়ে দেনাদার আদালতে উপস্থিত হন এবং এইরূপ উপস্থিত হওয়ার আগে বা পরে যখন হউক, উক্ত কার্যধারায় তাহাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়, তাহা হইলে ধরিয়া লওয়া হইবে (Presumed) যে, তিনি নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানিতেন অথবা তাহার উক্তরূপ বিশ্বাস করার কারণ ছিল;
(খ) যদি রিসিভার আদালতকে এই মর্মে অবহিত (report) করেন যে, দেনাদারের বণ্টনযোগ্য সম্পদের মধ্যে উদ্ধারকৃত এবং উদ্ধারযোগ্য সম্পত্তিগুলির (assets) আনুমানিক মূল্য প্রমাণিত দেনাসমূহের ৫০% পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত নহে, তাহা হইলে আদালত, বিপরীত প্রমাণিত না হইলে, ধরিয়া লইবে (shall presume) যে, দেনাদার নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানিবার পরও অথবা তাহার উক্তরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকা সত্ত্বেও, তিনি তাহার কারবার চালু রাখিয়াছেন :
তবে শর্ত থাকে যে, কোন নির্দিষ্ট তারিখে দেনাদার নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানিতেন কিনা, অথবা তাহার উক্তরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ ছিল কিনা তাহা নিরূপণের ক্ষেত্রে, উক্ত তারিখে তাহার যে সকল দেনা বার মাসের অধিককালব্যাপী অপরিশোধিত ছিল সেই সকল দেনা পূর্বোক্ত সম্পত্তিগুলির (assets) মূল্যমান হইতে বাদ দিতে হইবে;
(গ) একজন দেনাদার নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানিবার পরও, বা তাহার উক্তরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকা সত্ত্বেও, তিনি তাহার কারবার চালু রাখিয়াছেন বলিয়া ধরিয়া লওয়া হইবে, যদি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর তিনি বাস্তবে তাহার কারবার চালু রাখিয়া থাকেন, এবং তিনি-
(অ) আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে না পারেন যে, নিজেকে স্বচ্ছল বলিয়া বিশ্বাস করিবার মত যুক্তিসংগত কারণ ছিল, অথবা
(আ) যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত আর্জি দাখিলকৃত হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন বত্সরের প্রতি বত্সরের জন্য তাহার কারবারের ব্যালেন্সশীট দাখিল করিতে ব্যর্থ হন; এইরূপ যুক্তিসংগত কারণ প্রমাণের দায়িত্ব বর্তাইবে তাহার উপর;
(ঘ) আর্জি দাখিলকৃত হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাসের মধ্যে দেনাদার কর্তৃক তাহার কোন পাওনাদারকে প্রদত্ত যেকোন অগ্রাধিকার, বিপরীত প্রমাণিত না হইলে, অযৌক্তিকভাবে প্রদত্ত হইয়াছে বলিয়া ধরিয়া লইতে হইবে৷
দায়মুক্তির আবেদন না করা, ইত্যাদির ফলাফল
৪৯৷ (১) যদি-
(ক) দেনাদার তাহার দায়মুক্তির বিষয়ে শুনানীর জন্য ধারা ৩০(১) (খ) (অ) এর অধীনে নির্ধারিত তারিখে বা, ধারা ৫০(১) এর বিধান সাপেক্ষে, আদালত কর্তৃক নির্ধারিত পরবর্তী কোন তারিখে উপস্থিত হইতে ব্যর্থ হন, অথবা
(খ) ধারা ৫০(১) এর অধীনে নির্ধারিত তারিখের পূর্বে দেনাদার তাহার দায়মুক্তির আবেদন পেশ না করেন, অথবা
(গ) দেনাদারের উক্তরূপ আবেদন শুনানীর পর আদালত যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করা যথাযথ হইবে না,
তাহা হইলে আদালত উক্ত দেনাদারকে দায়গ্রস্ত দেউলিয়া বলিয়া ঘোষণা করিয়া একটি আদেশ প্রদান করিবে৷
(২) এই অধ্যাদেশের অধীনে কোন দেনাদার কারাগার বা অন্য কোন হেফাজত হইতে মুক্তি লাভের পর উপ-ধারা (১) এর অধীনে দায়গ্রস্ত দেউলিয়া ঘোষিত হইলে, এবং আদালত যথাযথ মনে করিলে দেনাদারকে উক্ত কারাগার বা হেফাজতে পুনঃসোপর্দ করিতে পারিবে এবং তদনুসারে উক্ত কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাহার হেফাজতে রাখিবার উদ্দেশ্যে দেনাদারকে গ্রহণ করিতে বাধ্য থাকিবেন; এইরূপ ক্ষেত্রে দেনাদারের মুক্তি লাভের পূর্বে তাহাকে দৈহিকভাবে আটক অবস্থায় রাখার ব্যাপারে যে ব্যবস্থা বলবত্ ছিল, তাহা পুনঃসোপর্দ করার পরও বলবত্ আছে বলিয়া গণ্য হইবে৷
দায়গ্রস্ত দেউলিয়া
৫০৷ (১) যে ক্ষেত্রে কোন দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদান করা হয়, সেক্ষেত্রে-
(ক) দেউলিয়া, উক্ত আদেশের তারিখের পরবর্তী ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে, আদালতে, তাহার দায়মুক্তির আবেদন করিবেন;
(খ) উক্ত মেয়াদের মধ্যে আবেদন করা হইলে আবেদনটি শুনানীর উদ্দেশ্যে আদালত, উক্ত মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, একটি তারিখ নির্ধারণ করিবে এবং তত্সম্পর্কে রিসিভার ও আদালতের নথিতে লিপিবদ্ধ পাওনাদারগণকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অথবা এইরূপ বিধি না থাকিলে আদালতের বিবেচনা অনুসারে যথাযথ পদ্ধতিতে, নোটিশ প্রদান করিবে;
(গ) আদালত, উপস্থিত সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে শুনানীর যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদানের পর, দেউলিয়ার দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করিতে পারিবে;
(ঘ) দায়মুক্তির আদেশ প্রদত্ত না হইলে, দেনাদার একজন দায়গ্রস্ত দেউলিয়া থাকিয়া যাইবে৷
(২) একজন দায়গ্রস্ত দেউলিয়া-
(ক) প্রতি ৬ (ছয়) মাস অন্তর একবার রিসিভারের নিকট এইরূপ একটি বিবরণী দাখিল করিবেন যাহাতে উক্ত ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে দেনাদার কর্তৃক প্রাপ্ত বা অর্জিত সকল অর্থ ও সম্পত্তির হিসাব লিপিবদ্ধ থাকিবে, এবং দেনাদার তাহার নিজের ও পরিবারবর্গের ভরণ-পোষণের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ বাবদ ব্যয়িত অর্থ বাদে অবশিষ্ট অর্থ ও সম্পত্তি রিসিভারের নিকট অর্পণ করিবেন;
(খ) আদালতের পূর্বানুমতি ব্যতীত বাংলাদেশ ত্যাগ করিবেন না৷
(৩) কোন দায়গ্রস্ত দেউলিয়া-
(ক) উপ-ধারা (২)(ক) এর বিধান পালনে ব্যর্থ হইলে, তিনি এক বত্সর কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন;
(খ) উপ-ধারা (২)(খ) এর বিধান ভংগ করিলে, দুই বত্সর কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷
দায়মুক্তি আদেশের ফলাফল
৫১৷ (১) দায়মুক্তি আদেশের কারণে দেনাদার নিম্্নবর্ণিত কোন দেনার দায় হইতে অব্যাহতি লাভ করিবেন না, যথা:-
(ক) সরকারের প্রাপ্য কোন দেনা:
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে শ্রেণীর দেনাকে এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট করিবে, আদালত ঐ শ্রেণীর দেনার ব্যাপারে দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করিতে পারিবে;
(খ) দেনাদার জড়িত ছিলেন এইরূপ প্রতারণা বা প্রতারণামূলক বিশ্বাস ভংগের কারণে সৃষ্ট দেনা বা দায় (liability);
(গ) দেনাদার জড়িত ছিলেন এইরূপ প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত ছাড় (forbearance) সংক্রান্ত দেনা বা দায়;
(ঘ) ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৮৮ ধারা অথবা Family Courts Ordinance, 1985 (XVIII of 1985) এর অধীনে খোরপোষ প্রদানের আদেশজনিত দায়৷
(২) দায়মুক্তি আদেশের ফলে দেনাদার, উপ-ধারা (১) এর বিধান সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন প্রমাণযোগ্য সকল দেনার ব্যাপারে দায়মুক্ত হইবেন৷
(৩) কোন দায়মুক্তি আদেশের ফলে এইরূপ কোন ব্যক্তি দায়মুক্ত হইবেন না, যিনি, আর্জি দাখিলের তারিখে, দেনাদারের অংশীদার অথবা সহ-ট্রাষ্টী ছিলেন অথবা কোন চুক্তির আওতায় দেনাদারের সহিত যৌথভাবে দায়বদ্ধ ছিলেন বা যৌথভাবে চুক্তি সম্পাদন করিয়াছিলেন অথবা দেনাদারের জামিনদার (surety) ছিলেন৷
(৪) কোন দায়মুক্তি আদেশ দেনাদারের দেউলিয়াত্বের এবং সংশ্লিষ্ট দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারার বৈধতার চূড়ান্ত সাক্ষ্য হইবে, এবং দায়মুক্তি প্রদত্ত দেনা বা দাবী সম্পর্কিত অপর যে কোন কার্যধারায় দেনাদার দাবী করিতে পারিবেন যে, দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারাটি সূচিত হওয়ার কারণ ঘটিয়াছিল, এবং তিনি আরও দাবী করিতে পারিবেন যে, আর্জি দাখিলের পূর্বেই উক্ত দেনা বা দাবী উদ্ভূত হইয়াছিল এবং দায়মুক্তি আদেশের দ্বারা উক্ত দেনা বা দায় সম্পর্কিত অপর কার্যধারাটি বারিত৷
(৫) কোন দেনাদারের দায়মুক্তি সত্ত্বেও, রিসিভারে ন্যস্ত এবং তত্কর্তৃক উদ্ধারযোগ্য সম্পত্তি উদ্ধারের ব্যাপারে রিসিভার যেইরূপ সহায়তা করার জন্য নির্দেশ দেন, সেইরূপ সহায়তা করিতে উক্ত দেনাদার বাধ্য থাকিবেন এবং দেনাদার উহাতে ব্যর্থ হইলে, তিনি অনধিক ১ (এক) বত্সরের কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন, এবং আদালত যথাযথ বিবেচনা করিলে দায়মুক্তি আদেশ প্রত্যাহার করিতে পারিবে, তবে দায়মুক্তি আদেশ প্রদানের পর হইতে উহার প্রত্যাহার পর্যন্ত যথাযথভাবে সম্পাদিত কোন বিক্রয়, হস্তান্তর, অর্থ পরিশোধ বা কৃত অন্য কিছুর বৈধতা উক্তরূপ প্রত্যাহারের ফলে ক্ষুণ্ন হইবে না৷
ষষ্ঠ অধ্যায়
সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা
ভবিষ্যতে পরিশোধযোগ্য দেনা
৫২৷ একজন পাওনাদার এমন দেনাও প্রমাণ করিতে পারিবেন যাহা দেনাদারকে দেউলিয়া ঘোষণার তারিখে পরিশোধযোগ্য না হইলেও পরবর্তী কোন তারিখে পরিশোধযোগ্য, এবং উক্ত পাওনাদার অন্যান্য পাওনাদারের সহিত সমভাবে বণ্টিত সম্পদ (dividend) গ্রহণ করিতে পারিবেন, তবে উক্ত বণ্টিত সম্পদ নির্ধারিত হওয়ার পর হইতে দেনাটি চুক্তির শর্তানুযায়ী, পরিশোধযোগ্য হওয়ার সময় পর্যন্ত মেয়াদের জন্য বণ্টিত সম্পদের উপর শতকরা বার্ষিক প্রচলিত ব্যাংক রেইট হইতে ২% বেশী হারে সুদ বাদ দিয়া নির্ধারিত বণ্টিত সম্পদের অবশিষ্টাংশ পাওনাদারকে পরিশোধ করিতে হইবে৷
পারষ্পরিক লেন-দেন এবং সমন্বয় সাধন
৫৩৷ যে ক্ষেত্রে দেনাদার এবং এই আইনের অধীনে দেনা প্রমাণকারী বা প্রমাণের দাবীকারী কোন পাওনাদারের মধ্যে পারস্পরিক লেন-দেন হইয়াছে, সে ক্ষেত্রে উক্ত লেন-দেনের কারণে এক পক্ষের নিকট হইতে অন্য পক্ষের পাওনার একটি হিসাব তৈরী করিতে হইবে, এবং এক পক্ষের নিকট পাওনা অর্থের সহিত অন্য পক্ষের নিকট পাওনা অর্থের সমন্বয় সাধন (set-off) করিতে হইবে, এবং হিসাব অনুসারে বাকী অর্থ সংশ্লিষ্ট যে কোন পক্ষ দাবী করিতে পারিবে বা উহা পাওয়ার অধিকারী পক্ষকে উহা পরিশোধ করিতে হইবে৷
জামানতধারী (secured) পাওনাদার
৫৪৷ (১) কোন জামানতধারী পাওনাদার তাহার জামানত আদায় করিয়া থাকিলে, আদায়কৃত নীট অর্থ বাদে বাকী পাওনা সম্পর্কে তিনি সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করিতে পারিবেন৷
(২) কোন পাওনাদার দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদান তারিখের পূর্বে তাহার জামানত সম্পূর্ণ বা আংশিক আদায় না করিয়া থাকিলে, জামানত-সাপেক্ষ সম্পত্তি, ধারা ৩১(২)-এর বিধান সত্ত্বেও, উক্ত তারিখে রিসিভারে বা, ক্ষেত্রমত, আদালতে আপনা-আপনি ন্যস্ত হইবে, এবং উক্ত সম্পত্তির দখল অবিলম্বে গ্রহণ করিতে হইবে৷
(৩) রিসিভার, আদালতের কোন নির্দেশ সাপেক্ষে, উক্ত সম্পত্তির যে আদায়যোগ্য মূল্য চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করেন, তাহা যদি-
(ক) কোন জামানতধারী পাওনাদারের জামানত সম্পর্কিত এবং আদালতে প্রমাণিত কোন দাবী মিটাইবার জন্য যথেষ্ট হয়, তাহা হইলে রিসিভার-
(অ) উক্ত সম্পত্তি বিক্রয় করিবেন, এবং বিক্রয় খরচ ও ৬৬ ধারার বিধান অনুযায়ী নির্ধারিত রিসিভারের প্রাপ্য ফিস বাদ দিয়া বাকী অর্থ হইতে পাওনাদারের দাবীকৃত সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করিবেন, এবং
(আ) উক্তরূপ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ বণ্টনযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত করিবেন, এবং
(খ) উক্তরূপ দাবী সম্পূর্ণরূপে মিটাইবার জন্য যথেষ্ট না হয়, তাহা হইলে উক্ত পাওনাদারের ইচ্ছা অনুযায়ী, রিসিভার-
(অ) উক্ত সম্পত্তি বিক্রয় করিবেন, এবং বিক্রয় খরচ ও ৬৬ ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত রিসিভারের প্রাপ্য ফিস বাদ দিয়া বিক্রয়লব্ধ সম্পূর্ণ অর্থ উক্ত পাওনদারকে পরিশোধ করিবেন, অথবা
(আ) উপ-ধারা (৬) অনুসারে সম্পাদিত একটি যথাযথ স্বত্ব দলিলসহ উক্ত পাওনাদারের নিকট উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর করিবেন৷
(৪) কোন জামানতধারী পাওনাদার তাহার জামানতের দাবী বণ্টনযোগ্য সম্পদের অনুকূলে পরিত্যাগ করিলে তিনি তাহার সম্পূর্ণ পাওনা প্রমাণ করিতে পারিবেন৷
(৫) কোন জামানতধারী পাওনাদারের দাবীকৃত পাওনা অপেক্ষা উপ-ধারা (৩)(খ)(আ)-এর অধীনে তত্কর্তৃক প্রাপ্ত সম্পত্তির মূল্য যতটুকু কম হয় ততটুকু তিনি বণ্টনযোগ্য সম্পদ হইতে দাবী করিতে পারিবেন৷
(৬) উপ-ধারা (৩)(খ)(আ)-এর বিধান কার্যকর করার জন্য আদালত প্রয়োজনীয় স্বত্ব দলিল সম্পাদন করিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে উহা আদালতের সীল-মোহরাংকিত করিয়া প্রয়োজনীয় আদেশ প্রদান করিবে; এবং এইরূপ দলিল প্রস্তুতকরণ এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নিবন্ধন খরচ প্রদান করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট ক্রেতা বা, ক্ষেত্রমত, পাওনাদার উক্ত খরচ প্রদানে ব্যর্থ হইলে, উক্ত সম্পত্তি ধারা ৩১(২) এর বিধান অনুযায়ী রিসিভারের বা, ক্ষেত্রমত, আদালতে ন্যস্ত থাকিবে৷
সুদ
৫৫৷ (১) যেক্ষেত্রে কোন দেনার উপর প্রদেয় সুদ নির্ধারিত না থাকে বা তত্সম্পর্কে কোন সম্মতি না থাকে এবং উক্ত দেনা বা অর্থ পরিশোধের মেয়াদ দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের তারিখের পূর্বেই উত্তীর্ণ হইয়া থাকে এবং উহা এই আইনের অধীন প্রমাণযোগ্য দেনা হয় সেইক্ষেত্রে পাওনাদার উক্ত দেনার উপর বার্ষিক অনধিক প্রচলিত ব্যাংক রেইট হইতে ২% বেশী হারে সুদের দাবী প্রমাণ করিতে পারিবেন, যদি-
(ক) কোন দলিলবলে উক্ত দেনা কোন নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধযোগ্য হয়, এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত সময় হইতে দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের তারিখ পর্যন্ত সুদ প্রদেয় হইবে; অথবা
(খ) উক্ত দেনা অন্য কোনভাবে পরিশোধযোগ্য হয় এবং সুদের দাবী করিয়া এই মর্মে একটি নোটিশ দেনাদারকে প্রদান করা হইয়া থাকে যে, উক্ত দাবীর তারিখ হইতে সুদ পরিশোধের তারিখ, যাহা ঘোষণাদেশ প্রদানের পরবর্তী কোন তারিখ হওয়া চলিবে না, পর্যন্ত সুদ পরিশোধ করিতে হইবে৷
(২) এই আইনের অধীনে প্রমাণিত কোন দেনার মধ্যে যদি সুদ বা সুদের পরিবর্তে অন্য আর্থিক সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকে, তবে বণ্টনযোগ্য অংশ (dividend) নির্ধারণের উদ্দেশ্যে, বার্ষিক অনধিক প্রচলিত ব্যাংক রেইট হইতে ২% বেশী হারে উক্ত সুদ বা সুবিধার পরিমাণ নির্ণয় করিতে হইবে, কিন্তু এইরূপ নির্ধারণের ফলে বণ্টনযোগ্য সম্পদ হইতে উচ্চতর হারে সুদ লাভের জন্য পাওনাদারের অধিকার ক্ষুণ্ন হইবে না, যদি এই আইনের অধীন দেনাদারের বিরুদ্ধে প্রমাণিত যাবতীয় দেনা সম্পূর্ণরূপে পরিশোধের পরও কোন বণ্টনযোগ্য সম্পদ থাকে৷
প্রমাণের পদ্ধতি
৫৬৷ (১) কোন দেনার সত্যতা প্রতিপাদন করতঃ (verify) একটি এফিডেভিট আদালতে দাখিল করিয়া বা রেজিষ্টার্ড ডাকযোগে প্রেরণ করিয়া উক্ত দেনা প্রমাণ করা যাইবে৷
(২) উক্ত এফিডেভিটে দেনার একটি হিসাব বিবরণী থাকিতে হইবে অথবা উক্ত বিবরণীর উল্লেখ থাকিতে হইবে; এবং উক্ত দেনা প্রমাণের জন্য কোন দলিল থাকিলে উহাও এফিডেভিটে উল্লেখ করিতে হইবে; এবং আদালত যেকোন সময় এইরূপ দলিল দাখিলের নির্দেশ দিতে পারিবে৷
তফসিল হইতে কোন দেনা বর্জন, ইত্যাদি
৫৭৷ (১) যদি রিসিভার মনে করেন যে, তফসিলে কোন দেনা বা তত্সংক্রান্ত কোন তথ্য যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত হয় নাই, তাহা হইলে তিনি উক্ত দেনা বা তথ্য তফসিল হইতে বর্জন বা সংশোধনের জন্য আদালতে আবেদন করিবেন, এবং আদালত, সংশ্লিষ্ট পাওনাদার ও দেনাদারকে নোটিশ প্রদান এবং, আদালতের বিবেচনামতে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধানের পর, উক্ত দেনা বা তথ্য তফসিল হইতে বর্জন বা সংশোধন করিতে বা দেনার পরিমাণ কমাইয়া দিতে পারিবে৷
(২) রিসিভার উপ-ধারা (১) এর অধীনে আবেদন না করিলে, কোন পাওনাদার বা পাওনাদার কমিটির আবেদনক্রমে, অথবা আপোষ-মিমাংসা, পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা বা পুনর্গঠন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে দেনাদারের আবেদনক্রমে, আদালত উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত নোটিশ ও অনুসন্ধানের পর উক্ত দেনা বা তত্সংক্রান্ত কোন তথ্য বর্জন বা সংশোধন করিতে বা দেনার পরিমাণ কমাইয়া দিতে পারিবে৷
ডিক্রী বাস্তবায়নকালে পাওনাদারের অধিকারের উপর বাধা-নিষেধ
৫৮৷ (১) যে ক্ষেত্রে কোন দেনাদারের সম্পত্তির বিরুদ্ধে কোন ডিক্রী বাস্তবায়ন (execution) এর আদেশ প্রদান করা হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রে রিসিভারের বিপরীতে কোন ব্যক্তিই উক্ত ডিক্রীর বাস্তবায়নজনিত সুবিধা লাভের অধিকারী হইবেন না, তবে আর্জি দাখিলের তারিখের পূর্বেই উক্ত ডিক্রী বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় বিক্রিত বিষয়-সম্পত্তির বিক্রয়লব্ধ অর্থ ইহার ব্যতিক্রম হইবে৷
(২) যে সম্পত্তির বিরুদ্ধে উক্ত ডিক্রী বাস্তবায়ন করা হইয়াছে, সেই সম্পত্তির ব্যাপারে জামানতধারী পাওনাদারের অধিকারকে এই ধারার বিধান খর্ব করিবে না৷
(৩) ডিক্রী বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় কোন ব্যক্তি সরল বিশ্বাসে দেনাদারের কোন সম্পত্তি ক্রয় করিয়া থাকিলে, তিনি, রিসিভারের বিপরীতে সকল ব্যাপারে, উত্তম স্বত্ব অর্জন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য করিতে হইবে৷
দেনাদারের সম্পত্তির ব্যাপারে ডিক্রী বাস্তবায়নকারী আদালতের কর্তব্য
৫৯৷ যে ক্ষেত্রে কোন ডিক্রী বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় দেনাদারের বিক্রয়যোগ্য সম্পত্তির বিরুদ্ধে ডিক্রী প্রদান করা হইয়াছে এবং উক্ত সম্পত্তি বিক্রয়ের পূর্বে উক্ত ডিক্রী বাস্তবায়নকারী আদালতকে এই মর্মে নোটিশ দেওয়া হইয়াছে, যে, উক্ত দেনাদার কর্তৃক বা তাহার বিরুদ্ধে ধারা ১০ এর অধীনে আর্জি দাখিল করা হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রে উক্ত আদালত উক্ত সম্পত্তির দখল সংশ্লিষ্ট রিসিভারের নিকট অর্পণ করিবে, যদি উহা সেই সময় আদালতের দখলে থাকে, তবে এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত ডিক্রী প্রদায়ক মামলা এবং উহা বাস্তবায়নের জন্য কৃত খরচ উক্তরূপে অর্পণকৃত সম্পত্তির উপর প্রথম চার্জ হইবে এবং এই চার্জের দায় মিটানোর জন্য রিসিভার উক্ত সম্পত্তি বা উহার অংশ-বিশেষ বিক্রয় করিতে পারিবেন৷
কতিপয় হস্তান্তর রহিতকরণ
৬০৷ (১) দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদান তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী ১৫ (পনর) বত্সরের মধ্যে সম্পাদিত দেনাদারের কোন সম্পত্তির হস্তান্তর, তাহা স্বয়ং দেনাদার বা তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি বা তাহার উত্তরাধিকারী বা কোন ব্যবস্থাপক (administrator) বা অন্য কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি যাহার দ্বারাই সম্পাদিত হউক না কেন, আদালত আদেশ দ্বারা রহিত করিতে পারিবে, যদি উহা এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, উক্ত হস্তান্তরের উদ্দেশ্য ছিল কোন দেনাদারের দেনা পরিশোধ ব্যর্থ করা:
তবে শর্ত থাকে যে, নিম্্নবর্ণিত হস্তান্তরগুলির ক্ষেত্রে উক্তরূপ রহিতকরণ প্রযোজ্য হইবে না, যথা:-
(ক) যথাযথ মূল্য বিশিষ্ট পণ্যের বিনিময়ে, কোন ক্রেতা বা, উক্ত সম্পত্তি দায়মুক্ত হইলে উক্ত দায়ের অধিকারী ব্যক্তি এর অনুকূলে, সম্পাদিত হস্তান্তর;
(খ) উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির হস্তান্তর;
(গ) দেউলিয়া আদেশ প্রদান তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী ৬ (ছয়) বত্সরের মধ্যে যেকোন সময় এমন কোন ব্যক্তির অনুকূলে সম্পাদিত হস্তান্তর, যিনি প্রমাণ করেন যে, হস্তান্তরের সময় দেনাদার, হস্তান্তরিত সম্পত্তির সাহায্য ব্যতিরেকেই, দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারায় তাহার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল দাবী পরিশোধে সক্ষম ছিলেন৷
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোন সম্পত্তির হস্তান্তর রহিত করিয়া আদেশ প্রদান করা হইলে, উক্ত সম্পত্তি বণ্টনযোগ্য সম্পদের অংশ হইবে এবং উহা আপনা-আপনি রিসিভারে বা, ক্ষেত্রমত, আদালতে ন্যস্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য করিতে হইবে, এবং তদনুসারে অবিলম্বে উহার দখল গ্রহণ করিতে হইবে৷
No comments:
Post a Comment